Friday, 7 October 2016

রং বদলানো পুজো - চতুর্থ অংশ - এখন বড়ো হয়ে গেছি


।। শুভ মহাসপ্তমী ।।

বেশ তো গেলো ছোটবেলার পুজোগুলো। এবার হলো গিয়ে চাকুরীজীবি হিসেবে পুজো উপভোগ করার সময়। পুজোর হিড়িকে যদিও কোনো ভাঁটা পড়েনি আজ অব্দি, কিন্তু চাকুরী করলে যা হয় আর কি। দায়িত্বের বোঝাতে অজুহাত মাথা চারা দেয় না। কোলকাতাতে যতদিন চাকরি করেছি ,ততোদিনও এই চতুর্থী, পঞ্চমী,ষষ্ঠী কম্পিউটার এর সামনে বসে অফিস করার দুঃখ ,মনের আকস্মিক উদ্বেগ গুলোর বেলুনে আলপিন ফোঁটাতো বারবার । কিন্তু আমি থেমে থাকার মানুষ নই। ঠাকুর তো দেখতেই হবে।  তাই পুজোর রং বদলের একটা নতুন ধারা শুরু হলো। পঞ্চমী, ষষ্ঠী অফিস করে তারপর মা কে নিয়ে ঠাকুর দেখা। অফিস টা শেষ হওয়া মাত্রই দে ছুট। আর বাঁধাধরা শুরু হতো, দমদম পার্ক দিয়ে এবং শেষ হতো ওই শ্রীভূমি, লেকটাউন ও উল্টোডাঙ্গার সব ঠাকুর দেখে। আরো একটা নতুন জিনিসের আগমন হয়েছিল মেনু তে আর সেটা হলো , ষষ্ঠির লাঞ্চ। অফিস এর সেজেগুজে যাওয়া আর দুপুরে জমিয়ে খাওয়া। খেতে আমি প্রচন্ড ভালোবাসি আর এই সেজেগুজে পেট ভোরে ভালো মন্দ খেয়ে কাজ কে ৪ দিনের জন্য টাটা করতে যে কি মজাই হতো। তারপর তো বাকি প্ল্যান গুলো হতোই। সবার সাথে ঠাকুর দেখা, মণ্ডপে আড্ডা মারা আর শাড়ী পরে অঞ্জলি দেয়া। তারপর আমার প্রিয় বান্ধবীদের সাথে এনতার ছবি তোলা।

***



কিন্তু এই বছর সব একটু এলোমেলো হলো বটে। পুজোর বদলের এক নতুন সূচনা। আর এই বদল যে ক্ষণস্থায়ী নয় সেটাও জানি। ধেড়ে হয়ে গেছি কিনা। আর এটাও জানি, পুরোনো পুজোর সিকি আধুলিও ফিরবেনা আর। মুহূর্ত খুবই দামি। বছরের পর বছর সবার জীবনে পরিবর্তন আসছে, জীবন ধারা বদলাচ্ছে। কেউ কর্মসূত্রে বহির্মুখী, কেউ সংসারীজীবন শুরু করেছে বা অন্য কিছু। ছোট্টবেলার দূর্গা পুজো আর সাথে ক্যাপ ফাটানোটাকে মনে পরে ঠিক ই কিন্তু পুজো আসছে এই ভেবে বা পুজোর দিন গুলোতে ঢাকের আওয়াজ শুনলে মন ছটপট হওয়ার যে পিকিউলিয়ার ব্যাপারটা, ওটা হারায়নি আর ওটা মুছবেও না কোনোদিন। আর ওটাই একমাত্র কারণ যে আমি প্রতিদিন এই ব্লগপোস্ট গুলো লিখে যাচ্ছি। কারণ পুজোর ছোট্ট ছোট্ট স্মৃতিও অমূল্য। দূর্গাপুজো হলো দুর্গাপুজো। আর কিছু জানিনা আর জানতে চাই ও না। দুর্গাপুজো নিয়ে পাগলামি ছিল, আছে ও থাকবেও। সে আমি ৮০ বছরের বুড়ি হয়ে যাই না কেন। তখন হয়তো নাতিপুতিদের সাথে ঘরে বসে স্মার্ট স্ক্রিন এ ক্যাপ ফাটাবো। বা অন্য কিছু আরো অ্যাডভান্সড।

ব্যাস। এই রং বদলানো পুজোর সংখ্যা এখানেই শেষ। সবাইকে শারদীয়ার আন্তরিক শুভেচ্ছা। খুব ভালো করে খাও, দাও,ঠাকুর দেখো আর জাস্ট চিল। .

বি :দ্রঃ আমার ষষ্ঠী সকাল থেকেই ঘুম উড়ে গেছে। জাস্ট এইটা ভেবে যে পুজো এসে গেছে।





Posted By Debarati Datta Read about me here blogging since 2011 Copyright © Debarati Datta Privacy Policy

No comments:

Post a Comment

Thanks for reading the post and if you like it then don't forget to fill a comment and send that to me .