Wednesday 25 September 2019

পুজো মানে - পুজোর গান

"বাজলো তোমার আলোর বেণু / মাতলো যে ভুবন  / বাজলো তোমার আলোর বেণু " - না এই গানটাকে আজ এই পোস্ট থেকে বাদ দিচ্ছি, এই গান টা মহালয়ার জন্য তোলা থাক ? আমি সাধারণত এই গান টা মহালয়ার আগে শুনিনা, মনে শুঁড়শুঁড়ি লাগলেও শুনিনা , এই গান টা মহালয়ার প্রভাতে শুনতে বেশি ভালো লাগে।  আমি আজ কথা বলছি সেই গান গুলোর ব্যাপারে, যেই গুলো সাধারণত পুজোর গান হিসেবে বেশি পরিচিত। পুজোর জন্য বিশেষ ভাবে রেকর্ড করা গান, যা প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে বাজতে থাকে পুজোর দিন গুলোতে, সেই সমস্ত গানের কথা । বছরের পর বছর গান বেরোতে থাকে, আমার ছোটবেলার পুজোর গান আবার আমার মায়ের সময়ের পুজোর গানের থেকে আলাদা। আলাদা গান আলাদা আলাদা মানুষের ভিন্ন স্মৃতিকে খোঁচা দেয়। গান এমন একটা জিনিস, যা মানুষকে প্রচন্ড ভাবে নস্টালজিক করে তোলে। কেমন যেন গানের প্রকাশকালীন সময়টা চোখে ভেসে ওঠে। আসুন, আজ একটু সেই সকল গান নিয়েই লেখালেখি হোক, আর আপনারা তার সাক্ষী থাকুন।



আমার নস্টালজিয়ার মধ্যে পুজোর গান বলতে আমি বুঝি কুমার শানুর "কত যে সাগর যদি পেরিয়ে এলাম আমি", "কে বলে ঠাকুমা তোমায়", "তুমি আছো এতো কাছে তাই"। আমি প্রাক ৯০ দশকে শৈশব কাটিয়েছি, স্বভাবতই, তখন কুমার শানুর যুগ। আর এই গান এখন শুনলে আমার তখনের পুজোর দিনগুলো মনে পরে, মনে পরে দূর থেকে প্যান্ডেলের মাইক গাইতো এই গানগুলো। বার বার। মনে পরে যায়, রাস্তায় ক্যাপ ফাটাতে ফাটাতে যদি কোনো ঠাকুমাকে দেখতাম, আমরা সবাই কেমন গেয়ে উঠতাম "কে  বলে ঠাকুমা তোমায়" - মানে না বুঝেই।  সেই পুরোনো মণ্ডপ, তখনের পুজোর গন্ধ সব এখন পাল্টে গেছে। আবার এমন কিছু পুজোর গান ও শুনতাম যা আমাদের অনেক আগের যুগের। ৮০ দশকের। তার মধ্যে আশা ভোঁসলে ও আর. ডি. বর্মনের বিখ্যাত আধুনিক বাংলা গানের জুড়ি মেলা ভার। আর অন্তরা চৌধুরী এর গানগুলোকেই বা কি করে বাদ দি। তারপরে আসলো উদিত নারায়ণের পুত্র আদিত্য নারায়ণের কিছু বিখ্যাত বাংলা গান, মিষ্টি কিছু গান, বিশেষত বাচাদের জন্য বানানো সেই গান। "এটা করোনা ওটা করোনা, করবো তবে কি, রোজ একই কথা ভাল্লাগেনা ছাই "। এই গান টা খুব মুখস্ত করেছিলাম, কারণ মাকে শুনিয়ে শুনিয়ে এই গান টা খুব গাইতাম। তারপর এই কয়েক বছর পরে আসলো একটা বিটকেল যুগ, মিতা চ্যাটার্জীর গান। আমার বিকট লাগতো 😖।

এতো গেলো আমার গল্প, কিছু গান এখনো বাজলে মায়ের মুখে শুনি, এই গান গুলো পুজোর সময় কি বাজতো। "মধু মালতি ডাকে আয়ে ", "যেতে দাও আমায় ডেকো না", "আমি মিস ক্যালকাটা ", "কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আর নেই ", "আয়ে খুকু আয়ে ", হেমন্ত , সতীনাথ, কিশোর কুমারের প্রমুখ গান আরো অনেক গান, যা আমার মনে এখন পড়ছে না। মায়ের কথায় তখন পুজোর গান একটা আকর্ষণ ছিল, ধীরে ধীরে যদিও সেই আকর্ষণ টা কমে যাচ্ছে, কারণ এখন তেমন ভাবে পুজোর গান বেরোয় না, বেরোলেও এমন কিছু মধুর হয়না, যা মন ছুঁয়ে নেয়।  সবচেয়ে বড়ো  তফাৎ যেটা আমি মনে করি, হলো গানের সাথে ভিডিও যোগ করার হিড়িক। পুজোর গান এখন দেখতে হয়। আর অতিরিক্ত মেক আপ করে বাঙালি আটপার শাড়ী / স্টাইলিশ ধুতি পাঞ্জাবি পরে,সেজেগুঁজে অতিরঞ্জিত করাটা আমি মেনে নিতে পারিনা। আগে যেই জিনিস টা ভালো লাগতো, সেটা হলো, সব প্যান্ডেলে বাংলা পুজোর গান বাজতো, বড় হওয়ার সাথে সাথে দেখলাম কিছু কিছু প্যান্ডেলে হিন্দি সিনেমার গান বাজতে থাকে।  কেমন যেন বেখাপ্পা লাগতো, কিন্তু ভাগ্যক্রমে, আমার পাড়ায় কিন্তু এখনো বাংলা গানই বাজে, নতুবা মহিষাসুরমর্দিনী নতুবা ঢাক। আর কিছু না হলে, মাইক থেকে আয়োজনকর্তাদের ব্যস্ততার কথোপকথন শুনতে পাওয়া যায়। যেটা বেজায় আজে বাজে গানের থেকে অনেক ভালো ও মজাদার  😁. অন্তত, পুজোর আয়োজন টা না দেখেও, শোনা তো যায়।

আপনারাও লিখুন না আপনাদের ছোটবেলার বা বড়বেলার স্মৃতি, এই পুজোর গান নিয়ে।  কমেন্ট করুন 😊।

🔺🔻🔺🔻🔺🔻🔺🔺🔻

Posted By Debarati Datta Read about me here blogging since 2011 Copyright © Debarati Datta Privacy Policy

No comments:

Post a Comment

Thanks for reading the post and if you like it then don't forget to fill a comment and send that to me .