Friday 20 June 2014

পাশের বাড়ি ও আমার ছোট্টবেলা

পাশের বাড়ি ও আমার ছোট্টবেলা 



আজকের আনন্দবাজার এর পত্রিকা সংকলনের শ্রীজাতের লেখা পাশের বাড়ি প্রছেদতা পড়ে আমার মনটা এতটাই নস্টালজিয়ায় ভরে উঠলো যে খাতায়ে পেন না চালিয়ে আর থাকতে পারলাম না। আজকে মরশুম টাও বেশ রোমান্টিক, টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে অনর্গল, জানালা থেকে দেখতে পাচ্ছি আমে এখনের পাশের বাড়ির ছাদটাকে আর সঙ্গে পত্রিকার এই স্মৃতিচারণ করে তোলা লাইনগুলো যেন অসাধারণ। পুরো নস্টালজিয়ায় মাখো মাখো কাকস্নান। 

ছবি : আনন্দবাজার পত্রিকা

শ্রীজাতের নিজের বক্তব্যের সাথে সাথে বাকি গুণীজনদের অভিজ্ঞতা পড়ার আনন্দটাও যেন উপরি পাওনা। কি জানি, আমার অনেক জায়েগায়ে নিজের ছোট্টবেলার পাশের বাড়িগুলোর প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম। এর আগেও অনেকবার লিখেছি প্রধানত: বাংলা পোস্টগুলিতে যে আমার ছোট্টবেলা দুটো পাড়ায়ে কেটেছে এবং দুটো পাড়ার স্মৃতিই আমার মনের কোন এক কোনায়ে যেন আজও প্রানবন্ত ও সুখদায়ক। সত্যিই বটে, পাশের বাড়িগুলি তখন যেমন ছিল এখন যেন অনেকটাই আলাদা। আমার শৈশব যে পাড়ায়ে কেটেছিল ,সেই পাড়ায়ে আমার ও দিদিভাই এর পছন্দের পাশের বাড়ি ছিল 'বম্মা বাড়ি'। পাশের বাড়ি বলে কিছু বুঝতাম না। জানতাম যে সেটা শুধু আমাদের দুই বোনের বম্মা বাড়ি ছিল। বম্মা বাড়ি যাওয়ার কোনো সময় ছিল না। যখন তখন দৌড় মেরে ছুটে চলে যেতাম ওখানে। ওখানে আমাদের প্রিয় গুটু দিদি , লিসা দিদি , গাদ্দু দিদি ও সবচেয়ে প্রিয় পপি ছিল। পপি ছিল ড্যাসহাউন্ড কুকুর। আমরা সবাই একসঙ্গে vcd তে সিনেমা দেখতাম , আমির-শাহরুখ -জুহি-কাজল এর সিনেমার সদ্য ক্যাসেটের তালে তালে নাচতাম ও আরো কতকিছুই না করতাম। কখনো ঘুমিয়েও পড়তাম , ঘুম থেকে উঠে দেখ্তেঅম নিজের বাড়ির বিছানায়ে আছি। তাছাড়াও ছিল মিসির বাড়ি, বুবাই দাদার বাড়ি, পল্টু দাদার বাড়ি আরো কত পাশের বাড়ি।আবার আমার ইতি - শৈশব ও কৈশোর কালে যেখানে ছিলাম সেখানে পাশের বাড়িকে উপভোগ করেছি আলাদা ভাবে। আমিও তখন শৈশবকে বিদায় জানাব জানাব করছি ,আর তখনি খুঁজে পেয়েছিলাম আমার খেলার দুই সঙ্গীকে। তাদের বয়স তখন ৪ ও ১.৫ যথাক্রমে শেলী ও শুভ।  দুই ভাইবোন আর আমার খেলার পরম সঙ্গী। শেলীর বাড়ি আমার কাছে নিজেরই বাড়ি ছিল। যাওয়ার কোনো বিধি নিষেধ ছিল ছিল না। মা বাড়িতে খুঁজে না পেলেই বারান্দা থেকে ডাক দিত , আর আমাকে ওদের বারান্দা থেকে মুখ বাড়াতে দেখতে পেত। তেমনি শেলী ও শুভ যখন একটু বড় হলো ,ওরা আমার বাড়ি আসত দোলনা চড়তে। আমি আমর কলে ওদেরকে বসিয়ে দোলনা চড়াতাম। আর ছাদটা তো একটা দোরগোড়া ছিল খোলা আকাশ কে ছোঁয়ার। বিকেলবেলা ছাদে যাওয়া মানে সবাইকে পাশের ছাদে পাওয়া, তেমনি শীতকালে দুপুরে পেতাম সবাইকে নিজের নিজের ছাদে। মাঝে মাঝে পাশের বাড়ির ঝিলমিল দিদির সাথে আমার দিদিভাইকে ছাদ থেকে ছাদ ব্যাডমিন্টন খেলতেও দেখেছি। বিশ্বকর্মা পুজোর সময় মুখিয়ে চেয়ে থাকতাম কোন ঘুড়িটা কার ছাদে কেটে পড়ে। সেই একদম টানটান উত্তেজনা। কিন্তু এখন সেই আর কিছুই নেই। থাকবেই বা কি করে ? আমরা সবাই এখন ব্যস্ত। অবসর সময় নিজেকে দিতে দিতেই ক্লান্ত আর পাশের বাড়িকে দেব কি? না, দোষ কারো নয়।  আমরা তো বাধ্য তাই না? এখন পাশের ফ্ল্যাটের ইনা - মীনা - টিনাকে Facebook এ Hi করতে হয়।  আর খেলাধুলা ? তার জন্য তো Facebook এর game requests আছেই। এখন শুধু পড়ে আছে স্মৃতিচারণ। কি জানি আজকের এই দিনটাকেও আগামী কাল কোনো দশক পরে মনে করব আর বলব "এখন আর সেরকম কই, সব হারিয়ে গেছে। " - সময়টাই আসলে চলে যাছে, আমরা সবাই তো মুহুর্ত মাত্র। সময়ের কাছে আমরা যে বাধা। 


বানানে ভুল থাকলে মার্জনা করবেন , সবই সফটওয়্যার এর মায়া 






Posted By Debarati Datta Read about me here blogging since 2011 Copyright © Debarati Datta Privacy Policy

2 comments:

  1. বাঃ , ভাল লাগল দেবারতি , আগে তোমার ব্লগে এসেছি কিন্তু খেয়াল করিনি যে তুমি বাংলাতেও লেখো :-)
    আমি ইংরেজি ব্লগের পাশাপাশি একটা বাংলা ব্লগ-ও চালাই...বাংলা ব্লগ এর সংখ্যা বেশ কম ...যাইহোক , আমার বাংলা ব্লগের লিঙ্ক দিলাম।সময় পেলে আমার ব্লগ-বাড়ি ঘুরে দ্যাখার নেমন্তন্ন রইলো :-)
    http://nijermoneblogblog.wordpress.com/

    ReplyDelete
    Replies
    1. obossoi :) Maniparna...dekhbo ebong porbo :)

      Delete

Thanks for reading the post and if you like it then don't forget to fill a comment and send that to me .