পুজোর পর সেইভাবে বাংলায় লেখা হয়নি। বাংলাতে লেখাটা একটা টান আর অনুভূতির ব্যাপার। মাঝে মাঝে বাংলা ছাড়া কিছু লিখতে ইচ্ছে হয় না। এখন আবার আমার সেই সময় যাচ্ছে। কারণ, এখন শীতকাল।
শীতকাল কখনোই আমার পছন্দের ছিল না। শীতকাল আসলে কেমন একটা জড়তা ধরে ফেলতো আমাকে, আর আমার মনে হতো আমি খোলামেলা ভাবে বাঁচছিনা। ডানাগুলো গুটিয়ে রাখার মতন। আমি গরমপ্রেয়সী। কিন্তু, কলকাতার শীতকালটাকে খুব মনে পড়ছে। ব্যাঙ্গালোরে শীত পড়েনা বললে ভুল হবে। এখানে চিরবসন্ত। কিন্তু লেপ গায়ে দিয়ে জুবুথুবু হয়ে থাকার শীত পড়েনা এখানে।
মা'র বক্স খাট নাড়া চাড়ার সাথে লেপ বা বালাপোশ বেরোনোর গন্ধ আর স্কুলের সবুজ সোয়েটার টার কথা খুব মনে পড়ছে। বিছানাতে লেপ তোষকের পাহাড়ে খেলা করা, ছাদের রোদ্দুরে মাদুর নিয়ে এলিয়ে থাকা, পড়াশুনো করা, মাঝে মাঝে এই বাড়ী - ওই বাড়ী এর লোকেদের সাথে হঠাৎ গল্প করা, টবের চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা গুলো দেখা সব মানেই শীতকাল। দুপুরের গরম গরম ভাত, ডাল, মাছের ঝোলের পরে বালাপোষের ভিতর ঝপাৎ করে ঢুকে পড়া আর দুপুর বেলার আকাশবাণীতে পুরোনো দিনের বাংলা গান শুনে তন্দ্রা ছিল নেশার মতন। বিকেলে কমলালেবুর খোসা ছাড়ানোর গন্ধর সাথে সাথে ব্যাডমিন্টন খেলা আর মাথার উপরে মশার দল নিয়ে হেঁটে চলা, সঙ্গে একটু গরম চপ বা বেগুনি খাওয়া, মাথায় স্কার্ফ জড়ানো অবস্থায় কুয়াশা কাটিয়ে টিউশন থেকে ফিরে আসা সব কি ভালোই না ছিল। জানুয়ারী এর বইমেলা, নাট্যোৎসব, সাংস্কৃতিক উৎসব ,পাড়ার পিকনিক এখনো হয়তো আছে। কিন্তু আগের মতন নেই।
"শৈশবে আর ফেরা যাবে নাতো
নেই পথ নেই হারিয়ে গেছে সে দেশ
ফিরবো বললে ফেরা যায় নাকি
পেরিয়েছো দেশ কাল জানো নাকি এইসময়
এখনো সামনে পথ হাঁটা বাকি
চাইলেও দিতে পারবেনা ফাঁকি নিশ্চয়ই " - ঘরে ফেরার গান।
কি লিখলাম কি জানি। বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন। গুগল ব্যবহার করছি।
Posted By Debarati Datta
Read about me here blogging since 2011
Copyright © Debarati Datta Privacy Policy